Sunday 16 March 2008

কুয়াশাখ্যান ...

২০০৩ সাল, বাংলাদেশ
জনপ্রিয় টিভি উপস্থাপক হানিফ সংকেত বাম হাত তুলে জোরে চিৎকার করে উঠলেন, ওইখানে একজন দাঁড়িয়েছেন। আপনার নাম?

অনুষ্ঠান সহকারিরা দৌড়ে গেলেন মাইক নিয়ে বিজয়ীর কাছে। বিজয়ী তার নাম বললেন। এরপর আরো ৩ জন বিজয়ীর নাম জেনে নিয়ে হানিফ সংকেত আবারো বললেন, এই যে সামনের সারিতে একজন দাঁড়িয়েছেন। আপনার নাম?

সহকারিরা মাইক ধরতেই বিজয়ী বললেন, আমার নাম কুয়াশা। হানিফ সংকেত হাততালি দিতে দিতে বললেন, আমরা ৫ জন বিজয়ী পেয়ে গেছি। আপনারা চলে আসুন মঞ্চে ...

পর পর ৫ জন বিজয়ী মঞ্চে এসে দাঁড়ালেন। প্রত্যেকের হাতে বিশাল সাইজের ফুলকপি। কুয়াশা নামের মেয়েটিও দাঁড়িয়ে আছে ফুলকপি হাতে।

দৃশ্যটি আমি দেখি পরদিন ফাগুন অডিও ভিশনে ইত্যাদি সম্পাদনার সময়। সহকারিরা খুশি গলায় বলল, দেখলেন আপনার বোনকে স্টেজে উঠিয়ে দিলাম।

আমি অবাক হই, আমার বোন!

কুয়াশা নামের মেয়েটিকে দেখিয়ে সহকারিরা বলল, এই মেয়েটি আপনার বোন নয়! আপনার আম্মার সঙ্গে দেখে আমরা তো বোন মনে করেছিলাম। আপনার চেহারার সঙ্গেও বেশ মিল আছে। তাই সবচেয়ে বড় ফুলকপিটা মিলনায়তনে প্রবেশের সময়ই তার হাতে ধরিয়ে দিয়েছিলাম যেন স্টেজে উঠতে পারে।

আমি মিন মিন করে বলি, আমরা ৪ ভাই। কোনো বোন নেই।
*
ইত্যাদির মিলনায়তন অংশ দৃশ্যায়ণের জন্য প্রচুর দর্শকের প্রয়োজন হয়। আমি ইত্যাদি সম্পাদনা করতাম জেনে অনেকেই অনুষ্ঠানের দর্শক হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে। তাই প্রতিবারই বেশ কিছু টিকিট আম্মার হাতে দিতাম। আম্মা সবাইকে বিলিয়ে দিতেন। কিন্তু এবার আম্মা নিজেই অনুষ্ঠানে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করলেন। আমি বলে দিয়েছিলাম অনুষ্ঠান সহকারিদের আমার নাম বলতে, তাতে ভালো সারিতে বসার জায়গাটা পাওয়া যাবে। আম্মা যে কুয়াশাকে নিয়ে যাবেন আমি জানতাম না। (কুয়াশার আম্মার সাথে আমার আম্মার খাতির ছিল একই কলোনিতে থাকতাম বলে)

সেই প্রথম কুয়াশাকে দেখি, টিভি পর্দায়। সামনাসামনি দেখি আরো দুইদিন পর, আমার বাসায়।

অনুষ্ঠানের দর্শকপর্বে অনেকগুলো ভিটামিনের নাম বলে কুয়াশা প্রথম না দ্বিতীয় পুরষ্কার হিসেবে বেশ কিছু বই জিতেছিল। সেখান থেকে কিছু বই আমাকে দেয়ার জন্য বাসায় আসে। আম্মা ঘুম থেকে আমাকে জাগান।

হাত-মুখ ধুয়ে কুয়াশার সামনে যাই। শ্যামলা বর্ণের মেয়েটি মুখ নিচু করে বসেছিল। সামনে ইত্যাদির প্রাইজ হিসেবে পাওয়া সবগুলো বই। আমি জিজ্ঞেস করি, ভালো আছ?
- জ্বি ভাইয়া।
- অনুষ্ঠান কেমন দেখলে?
- ভালো। আমি তো কিছু বই-ও পুরষ্কার পেলাম।

আমি আর বলি না যে তাকে আমার বোন ভেবেই স্টেজে তুলে দেয়া হয়েছিল। (এক্ষেত্রে একটা কথা বলে রাখি, কেউ যেন ভাববেন না ইত্যাদির দর্শকপর্বগুলো সাজানো, সহকারিরা প্রতিপর্বেই ২/১ জনকে স্টেজে উঠিয়ে দিলেও সেখানে প্রশ্নোত্তর অথবা ফানগুলো নিজেদের বুদ্ধিমত্তা দিয়ে করতে হয়। তবে আশার কথা এই যে স্টেজে উঠলেই কিছু না কিছু পুরষ্কার পাওয়া যায়)

- শুনেছি তুমি খুব গল্পের বই পড়।
- আপনিও তো পড়েন। আপনার শেলফেও অনেক বই দেখলাম। তাই আম্মা বলল, এখান থেকে আপনাকে যেন কয়েকটি দিই।
- না না, আমার লাগবে না। বরং তুমি আমার শেলফ থেকেও বই নিয়ে পড়তে পারো। আমি তো বাসায় তেমন থাকি না। তুমি এসে আমার ছোট ভাইকে বলে নিয়ে যেও।
*
সম্ভবত জুন-জুলাই, ২০০৭ সাল, লন্ডন
- হ্যালো আম্মা কেমন আছ তোমরা?
- ভালো? তুই কবে আসবি? বিয়ে শাদী করতে হবে না?
- বিয়ে তো করব আগামী বছর ১৪ এপ্রিল। তুমি এর মধ্যে মেয়ে ঠিক করে রেখো।
- আমি একটা মেয়ে দেখেছি। আমার পছন্দ হইছে।
- তাই নাকি? ছবি পাঠাও।
- তুই চিনিস মেয়েকে। কুয়াশা...
- কুয়াশা! নাম তো সুন্দর। কোন মেয়েটা?
- ওই যে ইত্যাদিতে গেছিল। তোকে বই দিতেও এসেছিল।
- কি জানি। আমি চেহারা মনে করতে পারছি না। তুষারকে (ছোটভাই) বল ছবি স্ক্যান করে পাঠাতে।
- আচ্ছা আমি বলব। ওর মা-র সঙ্গে তো আমার খাতির আছে। একদিন বাসায় যাব।
- তুষারকে বোলো ক্যামেরা নিয়ে যেতে।
*
কুয়াশাকে আবার দেখি, আন্তর্জালে। প্রায় ৬/৭ টা ছবি। কিন্তু কোনোটাতেই চেহারা ঠিকমতো বোঝা যায় না। মুখটুখ ঢেকে রেখেছে। ছোটভাইকে জিজ্ঞেস করলাম ছবির এই অবস্থা কেন? ছোটভাই জানায় মেয়ে নাকি একদমই ছবি তুলতে দিতে চায়নি। যাহোক বেছেবুছে একটা ছবি পেলাম যেখানে চেহারাটা পরিষ্কার এসেছে।
*
- হ্যা আম্মা। আমার পছন্দ হয়েছে।
- পাকা কথা দিব? আমি কিন্তু ১০০০ টাকা সেলামি দিয়ে এসেছি।
- এখনো হ্যা-না কিছু বোলো না। আমি তো আসছিই দেশে। সামনাসামনি দেখতে চাই মেয়েকে প্রথমে।
- সেটাই ভালো। কুয়াশার বাবাও তোকে প্রথমে দেখতে চেয়েছে।
- আমার ছবি দিয়ে দিও।
- ধ্যাত। তোর কোনো ভালো ছবি নাই। তুই কিছু ছবি তুলে আমাকে পাঠা।
- আচ্ছা পাঠাব নে। তুষারকে বোলো মেয়ের মোবাইল নাম্বারটা এসএমএস করতে।
*
স্কুলজীবনের বন্ধু মেহেদী এসএলআর ক্যামেরা কিনে শখের ফটোগ্রাফী শুরু করেছে। বন্ধুকেই বলতেই সে খুবই খুশি, ফার্স্ট এ্যাসাইনমেন্ট। সে ঠিক করল খুব সকালে ছবি তোলা হবে। সেসময় ওয়েদার বেশ ভালো থাকে, ছবিতে লাইটিং ভালো হবে। সকাল ৭টায় ছবিতোলা পর্ব শেষ হলো। সেইদিনই ছবিগুলো পাঠিয়ে দেই। কয়েকদিন পর ছোটভাই মেয়ের মোবাইল নাম্বার পাঠায়।

প্রথম কথোপকথন
- হ্যালো, কুয়াশা?
- জ্বি। কে?
- আমি .... অমুক ...
- স্লামালেকুম।
- কেমন আছ?
- এই তো, ভালো।
- ইয়ে মানে, তোমার সঙ্গে আমার তো বিয়ের কথা চলছে। তুমি কি জানো?
- জ্বি বুঝতে পারছি।
- তোমার কি ইচ্ছা?
- আব্বা আম্মা যা ঠিক করবেন।
- মানে? তোমার আব্বা আম্মা একটা গরুছাগলের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দিলেও কি রাজি হবে?
- ওনারা এটা করবেন নাকি? আপনি কি গরুছাগল?
- ওই কথার কথা বললাম আর কি। আমার সম্পর্কে কিছু জানতে ইচ্ছে করে না? তোমার কোনো প্রশ্ন/ জিজ্ঞাসা থাকলে আমাকে করতে পারো।
- আমি তো আপনাকে চিনি।
- ও আচ্ছা। তুমি এতো কম কথা বল কেন?
- আমি এমনই।
- আচ্ছা তোমার ইমেইল আইডি কি? তুমি কি চ্যাট কর?
- জ্বি না।
- তোমাদের বাসায় কমপিউটার নাই?
- না।
- আয় হায়। তোমরা এতো গরীব?
- জ্বি আমরা খুব গরীব।

দ্বিতীয় কথোপকথন
- হাই কুয়াশা, কেমন আছ?
- জ্বি ভালো।
- কি কর?
- বিকালের নাস্তা করি।
- কি খাও?
- পুরি।
- পুরি। কিনে আনছ না বানানো?
- বানানো।
- কে বানাইছে?
- আম্মা।
- তুমি কিছু রাঁধতে পারো না?
- না।
- এরপর কি করবে?
- সন্ধ্যা হলে পড়তে বসব।
- ও আচ্ছা।

কিছুক্ষণ চুপ দুজনেই।

- কি ব্যাপার কথা বলছ না যে?
- কি বলব
- আমিই বকবক করছি। তুমি কিছু বল।
- কি বলব?
- আরে সেটা কি আমাকেও বলে দিতে হবে? আমার সম্পর্কে তোমার কি কিছুই জিজ্ঞেস করার নাই?
- কি জিজ্ঞেস করব?
- আহা। তোমার আমার বিয়ের কথা হচ্ছে। কতো কিছুই তো জিজ্ঞেস করার থাকতে পারে। আমি কি করি, হোটেলে কাজ করি না দোকানে? কতো কিছুই তো জানার আছে। আর আমাকে আপনি আপনি করে বলছ কেন? তুমি করে বল।
- এখন পারব না।

আবারও চুপচাপ।

- তুমি এতো কম কথা বল কেন? আমি কিছু জিজ্ঞেস করলেই উত্তর দিচ্ছ। এমনিতে কিছু বলছ না।
- আমি একটু কম কথা বলি।
- ঠিকাছে। কিন্তু এটাতো বিয়ের ব্যাপার, না? বিদেশে থাকা ছেলেদের ব্যাপারে কতোরকম গল্প চালু আছে। তোমার তো আমাকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সবকিছু জিজ্ঞেস করা উচিত। কতো কিছু জানার থাকতে পারে। তোমার কেন ইচ্ছে করবে না! আমার কোনো এ্যাফেয়ার আছে কিনা? বা হাবিজাবি কতোসব। এতো কম কথা বললে তো চলবে না। আমরা একটা সিদ্ধান্তে যেতে চাচ্ছি। অথচ আমি কিছু জিজ্ঞেস করলে তবেই উত্তর দিচ্ছ, এটা কেমন কথা, তুমি নিজে থেকেই ....
- আপনি আমাকে বকা দিচ্ছেন কেন?
- না বকা নয়, এই বোঝাচ্ছি আরকি। যাহোক, আমার মনে হচ্ছে তুমি বোধহয় এ বিয়েতে রাজি না। ঠিক আছে, আমি আর তোমাকে ফোন করব না। তুমি যদি আমাকে এসএমএস কর, তাহলে বুঝব তুমি বিয়েতে ইন্টারেস্টেড, তাহলেই আমি আবার ফোন করব। আমি তোমার এসএমএসের অপেক্ষায় থাকলাম।

সেপ্টেম্বর ২০০৭, লন্ডন
- কুয়াশার সঙ্গে কথা বলেছিস?
- হ্যা আম্মা। কিন্তু মেয়ে তো কথা বলে না।
- কথা বলে না মানে?
- আরে, কিছু জিজ্ঞেস করলে উত্তর দেয়। এমনিতে চুপ করে থাকে। আমার তো মনে হয় মেয়ের কোনো এ্যাফেয়ার আছে, তাই আমার প্রতি ইন্টারেস্টেড না।
- এটা কেমন কথা?
- হ্যা। আমি ফান করি, কিন্তু মজা পায় না। মেয়ে তো গল্পের বইটই পড়ে জানতাম। ফান বোঝে না। কোথায় আমি রোমান্টিক করে বললাম, তুমি এসএমএস করলে ফোন করব। আজকে এতোদিন হয়ে গেল কোনো এসএমএস নাই। আমিও আর ফোন করি নাই।
- তাহলে এখন কি করব? কুয়াশার মাকে না করে দেব?
- জানি না। এমনিতে আমার ভিসা রিনিউ করার সময় এসেছে। টেনশনে আছি। যদি ভিসা রিনিউ না হয় তখন তো দেশে ফেরত আসতে হবে। আর দেশে আসলে বিয়ে আরো এক বছর পরে করব ২০০৯ সালে। এখন বিয়েতে রাজি হলে পরে ভিসা রিনিউ না হলে মেয়ে পক্ষ বলবে ঠগবাজি করে বিয়ে করেছি। সো বিয়ে টিয়ে সব এখন বাদ। ভিসা রিনিউ হলে ছুটিতে দেশে আসছি, তখন ভাবা যাবে। আর এসব কুয়াশা টুয়াশা দিয়ে হবে না।
- তুই যা ভালো বুঝিস।

০৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৮, ঢাকা
- কিরে তুই বিয়ে করবি এবার?
- আরে বিয়ে তো করব ১৪ এপ্রিল। কিন্তু ততোদিনে আমি লন্ডনে ফিরে যাব। তুমি তো কোনো মেয়ে ঠিক করে রাখতে পারলে না আম্মা। তাহলে অন্তত এনগেজমেন্টটা করে যেতে পারতাম।
- এ্যাই তুই কুয়াশাকে তো সামনাসামনি দেখিস নাই। দেখবি?
- ওই মেয়ের এখনো বিয়ে হয়নি? তুমি না করে দাওনি?
- আমি হ্যা-না কিছুই বলিনি। শুধু বলেছি মেয়ের বাবা তো ছেলেকে দেখতে চেয়েছে। ছেলে আসুক, তারপর দেখা যাবে। এখন তো তুই এসেছিস, আবার যোগাযোগ করব?
- ছবি দেখে পছন্দ হয়েছিল। কিন্তু সামনাসামনি দেখে যদি পছন্দ না হয়? তখন না কেমন করি বলি।
- আমি বললাম তো। ছবিতে যেরকম, সামনাসামনিও সেরকম।
- কিন্তু মেয়ে তো কথা কম বলে।
- তো তোর সঙ্গে কি বেশি বেশি কথা বলবে নাকি? বিয়ে হয়নি কিছু হয়নি। করব যোগাযোগ?
- আচ্ছা কর।
*
আম্মা যোগাযোগ করল কুয়াশার মা-র সঙ্গে। সারাদিন টো টো করে রাতে ঘরে ফিরে আমি জানতে চাইলাম। আম্মা মুখ কালো করে বলল, কুয়াশার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে আরেক জায়গায়। তুই কিছু বললি না দেখে আমিও ওদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছিলাম। ওরা ভেবেছে আমরা ইন্টারেস্টেড নই।
- তাই নাকি?
- হ্যা। কুয়াশার আম্মা বলল, আমরা গরিব আপা। একটা গরিব ছেলে পাইছি। আর আপনারা তো যোগাযোগ করলেন না। তাই ওই গরিব ছেলের সঙ্গেই বিয়ে ঠিক করে ফেলেছি। আপনাদের মতো বড়লোকের সঙ্গে তো আমাদের মানায় না।
- হু বুঝলাম। কিন্তু কথার মাঝখানে এতো গরিব গরিব কেন? এসব কি ধরনের কথা?
- কি জানি।
*
সেরাতে আমার ইমেইল ইনবক্স থেকে কুয়াশার ছবি বের করে দেখতে থাকলাম। কেন জানি হঠাৎ করেই প্রেমে পড়ে গেলাম মেয়েটার। খারাপ লাগতে শুরু করল। ইস, এই মেয়েটার বিয়ে আরেক জায়গায় হয়ে যাবে? খুব খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে থাকলাম কুয়াশাকে। চোখ-মুখ-ঠোঁট-নাক-তিল ... এতো সুন্দর মেয়ে আমি আগে বুঝি নাই! কি বাল মিডিয়ায় কাম করি। সুন্দর চিনি না। বুকের মাঝে চিনচিন করে উঠল। কুয়াশাকে হারিয়ে ফেললাম?

সেরাতে প্রচুর সিগারেট খেলাম। মানতেই পারছি না যে কুয়াশা আরেকজনের বউ হয়ে যাবে। এমন কেন মনে হচ্ছে? কুয়াশার তো আমার বউ হওয়ার কথা না। আমিই তো যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছিলাম। ধ্যাত, ছাইপাশ ভাবতে ভাবতে হঠাৎই মনে হলো, আচ্ছা কুয়াশার কি সত্যিই আরেক জায়গায় বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। ওর আম্মা 'গরিব' কথাটা কেন তুলল? সহজভাবে বললেই হতো যে মেয়ের বিয়ে আরেক জায়গায় ঠিক হয়ে গেছে। তবে কি কোনো ক্ষোভ থেকে বলেছে? আমাদের পরিবারের কোনো কিছুতে কি তাদের প্রতি তাচ্ছিল্যভাব করা হয়েছে? ভাবতে ভাবতে আমার দৃঢ় বিশ্বাস জন্মাল, না - কুয়াশার বিয়ে ঠিক হয়নি কোথাও।
*
পরদিন আম্মাকে বললাম, আম্মা তুমি খালাকে কুয়াশাদের বাসায় পাঠাও। আমার মনে হচ্ছে যে ওর বিয়ে ঠিক হয়নি, অন্য কোনো ব্যাপার আছে। আর তুমি আবার ফোন কর কুয়াশার আম্মাকে। আফরোজা আন্টিকেও (আম্মার বন্ধু) বল। কুয়াশার যদি সত্যিই বিয়ে ঠিক না হয়ে থাকে তবে ওর সঙ্গে আমার এনগেজমেন্টের ব্যবস্থা কর।

খালা ওদের বাসায় গেল। আফরোজা আন্টি ফোন করল। আম্মা তার অফিসের একজনকে (কুয়াশাদের পরিচিত) পাঠাল ওদের বাসায় এমনিতে ঘুরে আসার জন্য, মেয়ের কি আসলেই বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে কিনা যদি বুঝতে পারে। ছোটভাইয়ের কাছ থেকে কুয়াশার মোবাইল নাম্বার আবার নিয়েছি, কিন্তু সাহস পাইনি ফোন করার।

রাতে বাসায় ফিরে আম্মার কাছে বিস্তারিত শুনে পুরা টাসকি খেলাম। ঘটনা হলো আমি নাকি ফোনে মেয়েকে গরিব বলে অবহেলা করেছি। আম্মা আমাকে বলল, তুই এসব বাজে কথা কেন বললি?
- কোথায় আমি ওদের গরিব বললাম!
- তুই নাকি বলেছিস, ওদের বাসায় কমপিউটার নেই, ওরা গরিব।
- আমি তো ওটা মজা করে বলেছি। এখন আমি যদি এরকম করে বলি - হা হা হি হি তোমরা এতো গরিববব...কি মজা...তোমাদের কমপিউটার নাই...হি হি - তাহলে কি ফান হয় নাকি? এটা তো সিরিয়াসলি বলতে হবে। মেয়ে এর উত্তরে নাকি সুরে বলতে পারত - কি আর করা বলেন, আমরা খুব গরিব, এখন বিয়ে করবেন? - মেয়ে তো কোনো রিঅ্যাক্টই করেনি ওইসময়। কথাই কয় না।
- সবকিছু তো তোর নাটক না। বিয়েশাদী বেশ সিরিয়াস বিষয়।
- আচ্ছা যাহোক, এখন ওরা কি বলেছে?
- ওরা আত্মীয়রা মিলে বিষয়টা আবার ভাবছে।
- তার মানে। কুয়াশার তাহলে অন্য কোথাও বিয়ে ঠিক হয়নি?
- আমি আর সেটা জিজ্ঞেস করিনি।
- গুড। তাহলে ১৩ ফেব্রুয়ারি কিংবা ২৯ ফেব্রুয়ারি আমার এনগেজমেন্ট ঠিক কর। কিন্তু ওই দুইদিনের যে কোনো এক দিন হতে হবে।
- আবার তোর এসব আর্ট কালচার শুরু হলো।
- আরে আম্মা এটাই তো জীবন। ১৩ ফেব্রুয়ারি হলো পহেলা ফাগুন। অথবা লিপ ইয়ারের দিন ২৯ ফেব্রুয়ারি।
- তাহলে ১৪ এপ্রিল বিয়ে করবি না?
- হ্যা ওইদিনই করব। আমি আবার আসব। তখন বিয়ে করব।
- তুই কুয়াশাকে একটা ফোন কর।
- কালকে করব।

১০ ফেব্রুয়ারি ২০০৮, ঢাকা
- হ্যালো কুয়াশা ?
- হ্যা, কে?
- আমি অমুক ... কেমন আছ?
- ভালো?
- কোথায় তুমি?
- ভার্সিটিতে
- শোনো, তুমি নাকি রাগ করেছ তোমাকে গরিব বলেছি বলে? আরে ওটা তো ফান ছিল।
- শুনুন। আমি এখন ক্লাসে ঢুকব। আপনি পরে ফোন করেন।
- তোমার ক্লাস কখন শেষ হবে?
- ২টায়।
- ওকে। আমি তখন ফোন করব। প্লিজ তুমি কিন্তু মোবাইল অফ করে রেখো না। তোমার সঙ্গে আমার অনেক কথা আছে।

কিন্তু কুয়াশা আমার কথা রাখল না। ২টার সময় ফোন করে কুয়াশার মোবাইল বন্ধ পেলাম। আমি ক্রমাগত এসএমএস করি। কুয়াশা রিপ্লাই দেয় না, মোবাইল খোলে না। আমার কষ্ট হতে থাকে। এতো রাগ মেয়েটার?

১১ ফেব্রুয়ারি ২০০৮, ঢাকা
সারাদিন কুয়াশার মোবাইলে ট্রাই করেছি, কিন্তু মোবাইল বন্ধ। সন্ধ্যায় বেইলি রোডে আড্ডা মারছিলাম। তখনই আম্মার ফোন।
- তুই কই?
- বেইলি রোডে?
- এখনি মিষ্টি কিনে কুয়াশাদের বাসায় চলে আয়। আমি কুয়াশাদের বাসায় আছি।
- তাই নাকি? ওরা রাজি হয়েছে?
- শোন। কুয়াশা ছোটবোনকে নিয়ে ওদের মামার সঙ্গে বইমেলায় গেছে। এখনই ফিরে আসবে। তুই জলদি আয়। কুয়াশাকে দেখে নিবি।
- আমি তো বাসা চিনি না।
- বাসায় যা। ড্রাইভার চেনে, ওকে নিয়ে চলে আয়।

সঙ্গে আরো দুইজন বন্ধুকে নিয়ে নিলাম। মিষ্টির দোকানে গিয়ে বন্ধুদের বললাম, দোস্ত চল একটা মজা করি। এই ধর ২০ কেজি মিষ্টি নিয়ে যাই। কি বলিস? বন্ধুরা ধমকে উঠল, রাখ ব্যাটা। এমনিতে গরিব কইয়া গ্যাঞ্জাম লাগাইছস। এখন ২০ মিষ্টি নিয়া গেলে বলবে লন্ডন থিকা আইয়া ভাব দেখাইতাছস। বন্ধুদের ধমক খেয়ে আমি ৪ কেজি মিষ্টি নিয়ে কুয়াশাদের বাসায় যাই।

বিধিবাম! কুয়াশাকে সেদিনও দেখলাম না। ওর বাবা আমাকে দেখল। টুকটাক প্রশ্ন জিজ্ঞেস করল। আমি অতি ভদ্র হয়ে বসে থেকে সবকিছুর উত্তর দিলাম। বারবার কুয়াশার মোবাইলে ট্রাই করা হচ্ছিল। কিন্তু বইমেলায় নাকি নেটওয়ার্ক থাকে না, তাই তাদের রিচ করতে পারছে না। আমি ৮টায় গেছিলাম ওদের বাসায়, রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত বসে থেকে ভগ্ন হৃদয় নিয়ে ফিরে এলাম।

রাতে বাসায় ফিরে আম্মাকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম ওরা আরো সময় চেয়েছে। মেয়ের বাবা-মা, মেয়ের মামাদের সঙ্গে আলাপ করবে। আমি অস্থির হয়ে গেলাম। সেরাতে আমি আরো সিগারেট খেলাম। আমার খুব মন খারাপ করতে থাকল। কুয়াশার ছবি বের করে দেখতে থাকি। জিদ চেপে গেল। সিদ্ধান্ত নিলাম এনগেজমেন্ট নয়, বিয়েই করব পহেলা ফাগুনে এই মেয়েকে। যেভাবেই হোক, দরকার হলে উঠিয়ে নিয়ে আসব। বন্ধুদের বলতেই তারা উৎফুল্ল হয়ে উঠল। চাকরিবাকরি করে সংসারি, কেউ কেউ বাচ্চাকাচ্চার বাপ হয়ে যাওয়া বন্ধুরা অতীতে ফিরে যাওয়ার সুযোগে আনন্দিত।

১২ ফেব্রুয়ারি ২০০৮
সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে দেখি আফরোজা আন্টি, খালা সহ আম্মার অফিসের অনেকেই এসেছে। আফরোজা আন্টিকে দেখে আমি বললাম, আন্টি আপনারা থাকতে কুয়াশার সঙ্গে আমার বিয়ে হবে না? ওর কোথাও বিয়ে ঠিক হয়নি। এতো কিসের আলোচনা ওদের।

আমার কথা শুনে আফরোজা আন্টি ফোন করলেন কুয়াশার আম্মাকে। সরাসরি বললেন, দেখেন আপা, আমরা জানতে পেরেছি কুয়াশার বিয়ে ঠিক হয়নি। এর আগে তো বিয়ে দিতে আপনারা রাজি ছিলেন তবে এখন এতো কিসের আলোচনা। শুনেন, আমরা আগামীকাল ছেলে নিয়ে আপনাদের বাসায় আসছি। কোনো আয়োজন না, আমরা কয়েকজন এসে আংটি পরিয়ে দিয়ে যাব। আপনি আপনাদের আত্মীয় যাদের খবর দেয়ার দিন। আর হ্যা, আগামীকালই হতে হবে। ছেলের তেমনই ইচ্ছে।

আমি বেরিয়ে পড়ি। সারাদিন আম্মার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ রাখি। ১৩ তারিখ নিয়ে ওদের আপত্তি। এই দিনটা নাকি ভালো না। আমি বললাম, ভালো না মানে? এইদিন পহেলা ফাগুন। পরের বছর কুয়াশা বাসন্তী শাড়ী পরে বিবাহবাষির্কী পালন করবে। আর নয়তো ২৯ ফেব্রুয়ারি কর। তবে আমি ৫ তারিখ লন্ডন ফিরে যাব। এদিকে বন্ধুদের সঙ্গে ২৬ তারিখ আমার সেন্টমার্টিন যাওয়ার কথা। নাহ, তুমি ১৩ তারিখই আংটি পরাবে বল। আর বেশি কথা বললে বলবা, কুয়াশাও রাজি। ১৩ ফেব্রুয়ারি, পহেলা ফাগুন এসব বিষয়ে ওরও আগ্রহ আছে।

আম্মাকে কথাগুলো বললাম ঠিকই। কিন্তু তখনও ওরা ফাইনাল কিছু বলছে না। রাতে বাসায় ফিরে আম্মাকে জিজ্ঞেস করতেই জানলাম, ওরা এনগেজমেন্ট করতে মোটামুটি রাজি। তবে ১৩ তারিখ না করে ১৪ তারিখ করতে বলছে। কি জানি ভালোবাসা দিবস।
- আরে ধুর। ওইসব বিদেশী কালচার। তুমি ওদের বল যে ১৩ তারিখ পহেলা ফাগুন বিয়ে হবে, তারপরদিন ভালোবাসা দিবসে আমরা দুইজন ঢাকা শহর ঘুরব।
- তুই না ১৪ এপ্রিল বিয়ে করবি?
- এখন সবাই পহেলা বৈশাখে বিয়ে করছে। তাই আমি পহেলা ফাগুনে করব।
- কিন্তু ওদের তো বলা হয়েছে শুধু আংটি পড়ানো হবে।
- ঠিক আছে। তারপরও আমি কাজি নিয়ে আসব। তুমি সিস্টেম করে বাবুল মামা আর খালাকে দিয়ে বিয়ের কথা পাড়বে। দেখো ওরা রাজি হয়ে যাবে।

১৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৮
পহেলা বসন্ত। ঢাকা শহরের মেয়েরা বাসন্তী শাড়িতে সেজেছে। আমি কুয়াশাকে বসন্ত দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে একটা এসএমএস করলাম। কোনো রিপ্লাই পেলাম না। বন্ধুদের সঙ্গে বেরিয়ে পড়লাম বইমেলা, টিএসসিতে। আম্মাকে বললাম আমাকে ফোন করলেই চলে আসব।

আম্মা বিকেল ৪টায় ফোন করে জানাল ওরা একটা চাইনিজ রেস্টুরেন্টে এনগেজমেন্টের আয়োজন করেছে। আমি যেন সন্ধ্যার পরপরই চলে আসি। আমি আলহামুলিল্লাহ বলে বইমেলা ঘুরতে লাগলাম। বাসায় যেতে আর কতোক্ষণ। কিন্তু হায়! বইমেলা থেকে বেরিয়ে দেখি রাস্তায় প্রচুর জ্যাম। বসন্ত দিবসে সারা বইমেলা-ঢাবি জুড়ে মানুষের বন্যা। বইমেলার লাইন শাহবাগ পর্যন্ত ঠেকেছে। বাসার দিকে সিএনজি-ট্যাক্সি কেউই যেতে চাইছে না। এদিকে বিকেল ৫টা বেজে গেছে। অবশেষে একটা রিক্সা পেলাম। ২৫ টাকা ভাড়ার জায়গায় তাকে ৭০ টাকা দিয়ে ঠিক করলাম। কিন্তু রিক্সা যাবেটা কোন জায়গা দিয়ে? আম্মা ক্রমাগত ফোন দিচ্ছে। রিক্সাওয়ালাকে বললাম, আমার বিয়া আজকে। যেমনে পারো জলদি চালাও। রিক্সাওয়ালা বলল, না ভাইজান। জোরে চালাতে পারুম না। দেহেন না কেমন জ্যাম।

বলেই রিক্সাওয়ালা দুর্দান্ত গতিতে ফাঁক ফোকর দিয়ে জ্যাম ঠেলে প্রাণান্তকর চেষ্টায় রিক্সা নিয়ে ছুটতে শুরু করল। বন্ধুর সঙ্গে কথোপকথন শুনে মাঝখানে রিক্সাওয়ালা বলল, ভাই আপনে তো মনে হয় লন্ডন থাহেন। আমারে নেওন যায় না? আমি কই, ভাই, সুযোগ থাকলে সবাইরে লন্ডন নিয়া যাইতাম।

যাহোক, সব ঠেলেঠুলে কোনোমতে রাত ৮টায় বাসায় পৌঁছলাম। আমি পাঞ্জাবি পড়ি না। পুরোনো ভাঁজ করা একটা শার্ট পরে বন্ধুদের নিয়ে (সঙ্গে কাজি) রওনা দিলাম চাইনিজ রেস্টুরেন্টে। রেস্টুরেন্টে ঢুকেই ইতিউতি তাকিয়ে কুয়াশাকে খুঁজি। কাউকেই দেখতে পাই না। আম্মাকে বললাম, ওদেরকে বলছ যে এনগেজমেন্ট না বিয়ে করতে চাই।
- আমি অনেক কষ্টে বুঝিয়েছি, ওরা রাজি।
- গুড। তাহলে বিয়ে পড়ানো হোক।


*
কাজি এসে বিয়ে পড়ানো শুরু করল। আমি কবুল বললাম কিন্তু তখনো কুয়াশাকে দেখিনি। কেমন যেন অদ্ভুত অনুভূতি হতে লাগল। অবশেষে কুয়াশাকে পেলাম। লন্ডনের বন্ধুদের ফোন/এসএমএস করে জানাতে শুরু করলাম। কাজি গেল মেয়ের কবুল আনতে। কুয়াশাকে না দেখেই বিয়ে করে ফেললাম।

কথা ছিল এনগেজমেন্ট, হলো বিয়ে। এরপর দুজনেই যার যার বাসায় চলে যাব। ঠিক হলো ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখে অনুষ্ঠান করে মেয়ে উঠিয়ে নেয়া হবে। কিন্তু বন্ধুরা শুরু করল ফাজলামো। দেখি না কি হয় ভেবে তারা বলতে শুরু করল মেয়েকে এখনই নিয়ে যাবে। মেয়ে পক্ষরা সবাই না না করে উঠল। বন্ধুরা আমাকে কানে কানে জিজ্ঞেস করল আমি রাজি কিনা। মাথা নেড়ে হ্যা বলতেই তারা আরো জোরেসোরে বিষয়টা নিয়ে দেনদরবার শুরু করল। মেয়েপক্ষ কোনোমতেই রাজি হচ্ছে না দেখে এবার বন্ধুরা বলতে লাগল, তাহলে ছেলেকে রেখে দেন। এই বিয়ের রাতে আমরা কাউকে আলাদা রাখতে চাই না। ওদের এই হল্লায় কিভাবে যেন গার্জিয়ানদের সায় মিলে গেল। আমি আস্তে করে কুয়াশাকে বললাম, শোনো আগামী ২৬ তারিখ সেন্টমার্টিনে আমাদের হানিমুন। আজকে যাও আর না যাও সেন্টমার্টিনে কিন্তু যেতেই হবে।

অবশেষে বন্ধুদের জয় হলো। তারা মেয়েপক্ষকে রাজি করিয়ে ফেলল। কুয়াশা বাবা-মাকে জড়িয়ে কেঁদেকেঁটে আমার সঙ্গে গাড়িতে উঠল। পরদিন ১৪ ফেব্রুয়ারি, ভ্যালেন্টাইন্স ডে। শাহবাগের ফুলের দোকানে গমগম করছে মানুষ। রাত ১টায় বন্ধুরা ছুটল ফুল কিনতে, বাসর সাজানো হলো। দীর্ঘ ১৬ বছর পর আমি দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ি। হা হা হা হা হা ....
*
২৬ তারিখ সেন্টমার্টিন গেলাম আমরা দুজনে। এর আগেরদিন ২৫ তারিখ সচলের আড্ডায় বইমেলায় কুয়াশাকে নিয়ে গেছিলাম। সেন্টমার্টিনে অনেক মজার সময় কাটল আমাদের। আমরা দুইজন দুইজনের হরিহর আত্মা হয়ে গেলাম। ছবি দেখে কি মনে হয় আপনাদের ?

6 মন্তব্য:

gizmo said...

ভাই, আপনার জীবনের কাহিনী দেখছি অনেক নাটকিয়! আপনাদের যে শেষ প‍্র্যন্ত মিলন হল সেটা শুনেই অনেক ভাল লাগল। তবে একটা কথা সতি‍্য যে আপনার "গরিব" নিয়ে মজা করাটা উচিত হয়নি। এই ছোট্ট একটু ভুলের জন‍্য আপনি অনেক বড় কষ্টও পেতে পারতেন। ভালো লাগল পড়ে, বই বা নাটক বানিয়ে ফেলুন না?

আমার গল্পটাও একটু অন‍্যরকম, আগে আমরা বিবাহ করে নেই, তারপর না হয় বলব!

আপনাদের সুখময় জীবন কামনা করছি। বিদায়।

avik-e-mama said...

অনেক দিন পর জীবনের চমৎকার একটা গল্প শুনলাম।

অভিনন্দন আপনাকে। আপনার জীবন সুখময় হোক।

Anonymous said...

সুখী হোন।
অসম্ভব সুন্দর গল্প আপনাদের।
আমি কাঠখোট্টা মানুষ, না হলে চোখে পানি চলে আসতো।

ভালো থাকবেন।আপনার ব্লগ খুঁজবো মাঝে মাঝে।লিখবেন।আপনি অত্যন্ত সাবলীল লেখেন।

দুজনের জন্যই অনেক অনেক শুভকামনা ও প্রার্থনা।

Anonymous said...

গল্পটা পরে খুব ই ভাল লাগলো।
আপনাদের জীবন সুখময় হক...এই কামনা ই থাকল।

Wafi Aziz Sattar said...

Nice! Nice to see how fate can be so nice, how patience pays off! Congratulations. May your life be even wonderful from here on now.

মাজেদুল ইসলাম said...

হুমমমম...খুব সুন্দর,পড়ে মনে হলো একটা মুভি দেখলাম।আমি সবসময় বিশ্বাস করি জীবন নাটকের চেয়েও অনেক বেশি নাটকিয়।আপনাদের জীবন সুন্দর কাটুক।