Sunday 22 February 2009

গল্পটি আপনি কীভাবে দেখাবেন?

০১
কারখানার মেশিনে বাবার হাত কাটা গেছে। ঘরে মা অসুস্থ। ছোট বালক তাই রিকশা নিয়ে বেরিয়েছে। সেই রিকশার চাকা ঘুরতে ঘুরতে ছোটবালকটি হয়ে উঠেন চিত্রনায়ক জসিম।

০২
অথবা গুন্ডারা ছোটবোনকে ধরে নিয়ে গেছে। জিপের পেছনে ভাইয়ের ছোট দুটি পা দৌড়াচ্ছে। সেই পা দুটো বড় হয়ে যায় দেখা যায় চিত্রনায়ক মান্নার পেছনে একদল গুন্ডা ছুটছে।


এই দৃশ্য দুটি হলো বর্তমান সময়কে খেয়ে ফেলে জাম্প করে ভবিষ্যতে চলে যাওয়া। সেলুলয়েডের বড়ই পরিচিত দৃশ্য।

*** *** ***

০১
হারিয়ে গিয়ে ফিরে আসা প্রেমিককে 'তবে শোনো সেই কাহিনী' বলেই নায়িকার চেহারা ক্যামেরায় ডিফোকাস হয়ে আসে। সেই শটে ডিজলভে ভেসে উঠে প্রেমিক হারিয়ে যাওয়ার পর নতুন প্রেমিকের সঙ্গে কিভাবে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন নায়িকা।

০২
অথবা ধরা পড়ে পুলিশের কাছে 'ওইদিন আমরা তিনজন আছিলাম' বলে চোর বয়ান করতে শুরু করে তার চুরির পূর্বপ্ল্যানের কথা।

বর্তমান থেকে অতীতে ফিরে গিয়ে স্মৃতিচারণ করার এই ট্রিটমেন্ট 'ফ্লাশব্যাক' নামে বেশি পরিচিত।

*** *** ***

ব্লগারদের কাছে এই ফ্লাশব্যাক সম্পর্কেই কিছু জানতে চাইব। ধরুন চল্লিশোর্ধ এক ভদ্রলোক (অর্থ ও খ্যাতিসম্পন্ন) তার জীবনী নিয়ে ছবি বানাবেন। দরিদ্র পরিবার থেকে খেয়ে না খেয়ে সে আজ এ অবস্থানে এসেছেন। ছবিতে তার এ বিষয়গুলো উঠে আসবে। যেমন,

১) সীমান্তবর্তী গ্রাম হওয়ায় তিনি বাল্যকালে চোরাচালানের সাথে জড়িত ছিলেন। একদিন বিডিআরের হাতে গ্রেফতার হয়ে নির্যাতনের শিকার হন। এমনই মার খেয়েছিলেন যে ওইসময় তার মনে হয়েছিল তিনি মার খেয়েই মরে যাবেন।
২) ঢাকা শহরে পাতি রংবাজের শিষ্য হিসেবে কিছুদিন কাজ করেছিলেন। একদিন ককটেল বহনের সময় তার মনে হয়েছিল এই বুঝি ককটেলটা ফুটে যাবে।
৩) টেন্ডার নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় বন্ধুদের একজন তার দিকে পিস্তল তাক করেছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন বন্ধুটি বুঝি গুলিই করে ফেলবেন।

তার জীবনী নিয়ে নির্মিত এই ছবির শুরুতে তার বর্তমান (যশ-খ্যাতি) অবস্থা দেখিয়ে ফ্লাশব্যাকে যাওয়া হয়, যেখানে তার বাল্যকাল থেকে বর্তমান অবস্থান পর্যন্ত সময় ও ঘটনাগুলো তুলে ধরা হয়।

এখন আমার প্রশ্ন হলো তার জীবনের ঘটনাগুলো দেখে দর্শকদের অনুভূতি কেমন হবে? বিডিআরের হাতে মারা খাওয়া, ককটেল বহন করা, পিস্তলের গুলা খাওয়ার ঘটনাগুলো যখন স্ক্রীণে আসবে তখন দর্শক কি ভীত হবেন? কি হয় কি হয় এমন আগ্রহ অনুভব করবেন? ঘটনা যেহেতু ফ্লাশব্যাকে ঘটবে দর্শকরা জেনেই গেছেন যে এই ভদ্রলোক বিডিআরের হাতে কিংবা ককটেলে কিংবা পিস্তলের গুলিতে মারা যান না।

তাহলে কি ছবিটি কোনো ফ্লাশব্যাক ছাড়াই (ভদ্রলোকের বর্তমান অবস্থা না দেখিয়ে) একেবারের বাল্যকাল থেকে শুরু করা ভালো হবে?

ছবিসূত্র : গুগল স্যার

1 মন্তব্য:

মাজেদুল ইসলাম said...

ইচ্ছা করলে ফ্লাসব্যাকেও অনিশ্চয়তা রাখা যেতে পারে।এক্ষেত্রে ফ্লাসব্যাকের ঘটনা প্রধান ক্যারেক্টারের কাছ থেকে না দেখিয়ে তার পরিচিত অথবা দলের লোকের কাছ থেকে শুরু হতে পারে।অর্থাৎ যে ব্যক্তির বর্ণনার ফলে ফ্লাসব্যাক দেখানো হবে সেই ব্যক্তি নিজেও নিশ্চিত না যে সে বেচে আছে না মারা গেছে,কাহিনীর শেষেই দেখানো হবে সে বেচে আছে কিনা।আমার ধারনা আপনি যেমন চাইছেন এটাই হবে তার সমাধান।