Friday 25 April 2008

যে কারণে সচলায়তনকে বিদায় জানালাম (সচলে আমার শেষ পোস্ট)

আমি আলাদা পোস্ট দিতে চাইনি। আমার পোস্টের কমেন্ট মুছে ফেলা হচ্ছে বলে আলাদা পোস্ট দিতে বাধ্য থাকলাম। এই পোস্ট মোছা হলে আমি আরো বাধ্য থাকিব আন্তর্জালে আমার বক্তব্য ছড়িয়ে দিতে। মডারেটরদের অনুরোধ করছি যেন আরো একদিন পর আমার একাউন্ট ডিলিট করা হয়। সচলায়তনে যারা আমার পোস্টে বিভিন্ন সময়ে কমেন্ট করেছেন/উৎসাহ দিয়েছেন তাদের জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ।

সত্যজিত সংক্রান্ত আমার পোস্টটি কাটপেস্ট এবং ইন্টারনেটের অন্যজায়গায় প্রকাশিত হয়েছে মর্মে সেটা প্রথম পাতা থেকে সরানো হয়েছে। নীতিমালা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে আমার উপর। আমি এর প্রতিবাদে নীতিমালা ভঙ্গের কারণ জানতে চেয়েছি এবং ইতিপূর্বে অন্য ব্লগে প্রকাশিত লেখা সচলে পোস্ট দেয়ার রেফারেন্স দিয়েছি। কিন্তু তারপর আমাকে মডারেটরের পক্ষ থেকে নিচের কথাগুলো শুনতে হয়েছে।

মডারেশন ভালো না লাগলে যেখানে মডারেশন নাই সেখানে যান, সামগ্রিক মঙ্গলের জন্য সেটাই ভালো। নীতিমালা ভেঙ্গেছেন, আমরা তৎপর হয়েছি। অন্য কাকে কি করলাম সেই কৈফিয়ত দিতে বাধ্য নই।

আমি স্বীকার করছি যে সত্যজিত সংক্রান্ত পোস্টটি একই সময়ে আমারব্লগ এবং সচলে প্রকাশিত হয়েছে। নির্মীয়মাণ আমাব্লগে পোস্ট দিলে ৩০ মিনিট দেরিতে প্রথম পৃষ্ঠায় আসে। তাই আমি ভেবেছিলাম সেরকম ঘটবে। কিন্তু কেমন করে জানি না সত্যজিত পোস্টটি আমারব্লগে সঙ্গে সঙ্গে প্রথম পৃষ্ঠায় এসে যায়। আমি পোস্টটি সচলেই প্রথম দিয়েছিলাম। অরূপই আমাকে প্রথমেই জানিয়ে দেয় যে এটা আমারব্রগেও প্রকাশ পেয়েছে। আমি অবাক হই। তাই এ কারণে আমার পোস্টটি প্রথম পৃষ্ঠা থেকে সরিয়ে দিলে আমি তেমন আপত্তি হয়তো করতাম না। যদিও আমি অনেক দেখেছি একই সময় একই পোস্ট দুই জায়গায় পোস্ট হতে

দ্বিতীয় কারণটি হলো কাটপেস্ট। আমার পোস্টের কন্টেন্ট ছিল প্রথম আলো থেকে কাটপেস্ট করা। এখানেও আমার আপত্তি আছে। কাটপেস্ট শব্দটি দিয়ে আমরা যতোটুকু বুঝি আমার পোস্টটি সেরকম ছিল না। প্রথম আলোর সত্যজিত আর্টিকেল থেকে আমি শুধু তার নির্মিত ছবির লিস্টটুকু নিয়েছি। প্রথম আলোর নাম লিখেছি সূত্রের প্রতি বিশ্বস্ত থাকায়। এ বিষয়ে আরো জানতে চাইলৈ এবং সচলে পূর্বে প্রকাশিত পুরো কাটপেস্ট সংক্রান্ত পোস্টের রেফারেন্স দিলে মডারেটররা আমাকে মনে করিয়ে দেয় তাদের নিম্নোক্ত ক্ষমতার কথা।

কর্তৃপক্ষ নিম্নোক্ত অধিকারগুলো সংরক্ষন করেন
× যেকোন অ্যাকাউন্ট ব্লক করা
× যেকোন লেখা / মন্তব্য মুছে ফেলা,
× যেকোন লেখা ১ম পাতা থেকে সরিয়ে দেওয়া
× যেকোন লেখা অপ্রকাশ করা
× এ বিষয়ে কোনরূপ ব্যাখ্যা দিতে কর্তৃপক্ষ বাধ্য নন।


যে কোনো ক্লোজড গ্রুপে মডারেশন থাকতেই পারে, এবং সেটা মেনেই সেখানে চলতে হবে। আমিও তাই মেনে সচলের মডারেশনকে শ্রদ্ধা করতাম। কিন্তু যখন দেখা গেল কারো কারো জন্য নিয়মের ব্যতিক্রম এবং এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে ‘কর্তৃপক্ষ চাইলে কোনো কৈফিয়ত না দেবার এখতিয়ার রাখে‘ শুনতে হয় তখন আমি অসহায় বোধ করি।

তখন মনে হয়, ‘হেথায় মোরে মানাইছে না গো‘ আর তাই সিদ্ধান্ত নিলাম সচলায়তনে আমি বরং নাই থাকি। আপনারা ভালো থাকবেন। যারা আমার লেখা পড়তেন, উৎসাহ দিতেন তাদের সবাইকে জানাই শ্রদ্ধা। আপনাদের খুব মিস করব …..

আমিই প্রথম নই। এর আগে আরো অনেকেই মডারেশনের কোপানলে পড়ে চুপিচুপি সচল ছেড়ে চলে গেছেন। কিন্তু আমি জানিয়েই যেতে চাই। আমার এ পোস্ট হয়তো অনেকেরই ভালো লাগবে না, তাদের কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।

ভালো থাকবেন, হ্যাপী ব্লগিং …

বি.দ্র. সচলে আমার একাউন্ট মুছে দেয়া হয়েছে (অনুরোধ করেছিলাম একদিন পর ডিলিট করতে) বলে আমি বাধ্য হলাম এখানে আমার পোস্টটি প্রকাশ করতে

সত্যজিতের নির্মিত সকল ছবির তালিকা

বৃহস্পতিবার প্রথম আলোর আনন্দ পাতায় সত্যজিত সম্পর্কে লেখা হয়েছে। এ লেখার শেষে সত্যজিতের এযাবত নির্মিত ছবির তালিকা দেয়া হয়েছে। প্রথম আলো কিছুদিন গেলে আর পড়া যায় না। তাই মনে হলো তার নির্মিত ছবিগুলোর লিস্টি তুলে রাখা দরকার। আগ্রহী যে কারোর কাজে লাগতে পারে।

সত্যজিতের ছবির লিস্টি

০১. পথের পাঁচালী (১৯৫৫)
০২. অপরাজিত (১৯৫৬)
০৩. পরশপাথর (১৯৫৮)
০৪. জলসাঘর (১৯৫৮)
০৫. অপ্সরীর সংসার (১৯৫৯)
০৬. দেবী (১৯৬০)
০৭. তিনকন্যা (১৯৬১)
০৮. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (তথ্যচিত্র) (১৯৬১)
০৯. কাঞ্চনজঙ্ঘা (১৯৬২)
১০. অভিমান (১৯৬২)
১১. মহানগর (১৯৬৩)
১২. চারুলতা (১৯৬৪)
১৩. টু TWO (১৯৬৫) (দূরদর্শনের জন্য নির্মিত)
১৪. মহাপুরুষ (১৬৫)
১৫. কাপুরুষ (১৯৬৫)
১৬. নায়ক (১৯৬৬)
১৭. চিড়িয়াখানা (১৯৬৭)
১৮. গুপী গাইন বাঘা বাইন (১৯৬৮)
১৯. অরণ্যের দিনরাত্রি )১৯৭০)
২০. সিকিম (১৯৭১)
২১. সীমান্ত (১৯৭১)
২২. দ্য ইনার আই (তথ্যচিত্র) (১৯৭২)
২৩. প্রতিধ্বনি (১৯৭২)
২৪. অশনি সংকেত (১৯৭৩)
২৫. সোনার কেল্লা (১৯৭৪)
২৬. বালা (১৯৭৬)
২৭. জন অরণ্য (১৯৭৬)
২৮. শতরঞ্জ কী খিলাড়ী (১৯৭৭)
২৯. জয় বাবা ফেলুনাথ (১৯৭৮)
৩০. হীরক রাজার দেশে (১৯৮০)
৩১. সদগতি (১৯৮১) (দূরদর্শনের জন্য নির্মিত)
৩২. পিকুর ডায়রি (১৯৮১) (দূরদর্শনের জন্য নির্মিত)
৩৩. ঘরে বাইরে (১৯৮৪)
৩৪. সুকুমার রায় (তথ্যচিত্র) (১৯৮৭)
৩৫. গণশত্রু (১৯৮৯)
৩৬. শাখা প্রশাখা (১৯৯০)
৩৭. আগন্তুক (১৯৯১)

Sunday 13 April 2008

আহা রে ... সোনালী বন্ধু রে ...

ওইদিন যে প্রচুর পরিমাণে মদ খাইছিলাম তা কিন্তু না, এরও অনেকদিন আগের আড্ডায় গাঞ্জা আর অরেঞ্জ জুস দিয়া ভোদকা খায়া আমি পরে ডিমভাজি করছিলাম, কারণ আমি শুধু ওইটাই ভালো করতে পারি এবং সবাই বলছিল ডিমভাজিটা দেখতে পুরা পুডিংয়ের মতো হইছে; অথচ ওইদিন অল্প মদ খায়া কেমন জানি হয়া গেলাম, আমার হাসনরাজা, লালন কিছুই ভালো লাগে না, খালি ঘুম পায়, বাসায় যাইতে চাইলে বন্ধু কয়, এতো যাই যাই করস ক্যান? গেলে তুই যা গা; তখন আমি আবার গান শুনতে থাকি, কারণ এই বাসার আড্ডায়, আমার যতোদূর মনে পড়ে, আমরা একলগে আইতাম, একলগে যাইতাম, আড্ডা শেষে বন্ধুরে অর বাসায় গাড়ি চালাইয়া দিয়া আইতাম। আহা রে ... সোনালী বন্ধু রে ...

ওই রাইতের আড্ডার কথা আমার এখনো মনে পড়ে, সকালে বাথরুমে দাঁত মাজতে গেলে এখনো আয়নায় মাঝে মাঝে বন্ধুরে দেখি, দেইখা হাসি আসে আবার দুঃখও লাগে; বন্ধুরে আমি খুব পছন্দ করতাম, এখনো করি, অর লগে আমার ঝগড়া লাগে প্রতি কথায়, তাও বন্ধুরে আমি ভালা পাই, বন্ধুর লগে এই শহরে বাসে, টিউবে, মুভিতে প্রচুর সময় কাটাইছি, অয় খাইতে পছন্দ করে, যতোটা আমি করি না, কিন্তু বন্ধুর লাইগা আমি অর খাওয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিজের খাওয়া লাইরা গেছি, লারতে লারতে অর কথা শুইন্যা গেছি, অর অফিসের কথা শুনছি, অফিসের পার্টির কথা শুনছি, অয় যে বেশি মদ খাইয়া হুঁশ হারাইয়া ফেলে সেই কথা শুনছি, তারপর ডিসিশান নিছি আমার লগে থাইকা মদ খাইয়া যদি হুঁশ হারায়া ফেলে তাইলে আমি অরে দেইখ্যা রাখুম। আহা রে ... সোনালী বন্ধু রে ...

সেই বন্ধু একদিন মাঝরাইতে মদ খাইয়া আমারে ফালাইলা এক ব্যাডার হাত ধইরা ট্যাক্সিতে কইরা চইলা গেলে অনেক দুঃখ পাইছি, হাউকাউ কইরা চিল্লাচিল্লি করছি রাস্তার মাঝখানে দাঁড়াইয়া আরেক বন্ধুর লগে, মনে মনে ভাবছি আর যামু না অর কাছে, কিন্তু পরদিন বন্ধু ফোন করলে পোলাপানের মতো অভিমান কইরা কইছি, তুই আমারে ফালাইয়া গেলি ক্যান, আমার খিদা পাইছিল, ভাবছিলাম তোর বাসায় গিয়া ভাত খামু; বন্ধু সরি কইলে এরপর আমরা আরো অনেকদিন এই শহরের রাস্তায় হাঁটছি, পার্কে গিয়া শুইছি, পার্টিতে গেছি, রাইতে অরে বাসায় দিয়া ভোরে নিজের বাসায় ফিরছি, কিন্তু কখনো হাত ধরতে গেলে বন্ধু ফস কইরা উঠছে, চেইতা গিয়া কইছে, তুই এতো খচখচ করস ক্যান?; ধমক খাইয়া আমি ভাবতে থাকি বন্ধুর লাইগা আমার মন এতো টানে কেন, আর সেইটা ভাবতে ভাবতে মনে পইরা যায় এই শহরে আসার পর বন্ধুর জন্মদিনে রাইতের অন্ধকারে অর গালে আমি একটা ছোট্ট চুমা দিছিলাম। আহা রে ... সোনালী বন্ধু রে ...

আবার ওই রাইতের কাহিনীতে ফিরা আসি, যে রাইতে আমি হুইস্কি খাইছি, গাঞ্জা খাইছি, ভোদকা খাইছি, চিপস খাইছি, সিগারেট খাইছি অথচ ডিমভাজা খাই নাই; কারণ আমার খুব ঘুম পাইতেছিল নাকি আমারে কেউ কইছিল ওইদিনের মতো ডিম ভাজতে কিন্তু ঘুমের কারণে আমি রাজি হই নাই সেইটা মনে আসে না; রাত আরো গভীর হইলে আমি বন্ধুর লগে ঘ্যান ঘ্যান করি, চল যাইগা, অনেক তো গান হইছে; বন্ধু ধমকায়, তুই যা গা; তখন আমার চোখে পাহাড় ভাইঙ্গা ঘুম আসে, রান্নাঘরে গিয়া খিচুড়ি খাইয়া আমি পাশের ঘরে চইলা যাই, কতোক্ষণ পরে আমার ঘুম ভাঙ্গে জানি না, আমি বন্ধুর খোঁজে ওই রুমে যাই কারণ অরে বাসায় দিয়া আইতে হইব কিন্তু বন্ধুরে দেখি না, পরে পাশের রুমে গিয়া আমি তব্দা খাইয়া যাই, পাচ মিনিট খাড়ায়া থাইকা ফিরা আইসা খাটের উপর লেপের তলায় ঢুইকা যাই।

তখন বিভিন্ন শব্দরাজি আমার মাথায় ক্রমাগত ঠকঠক কইরা বাড়ি মারতাছিল, আহ .. উহ .. তুমি কিন্তু আমাকে ব্যথা দিচ্ছ সোনা ...

আহা রে ... সোনালী বন্ধু রে ...

প্রবাসে থেকে বাংলাদেশের জন্য দুঃখবিলাস !!

আমাদের প্রবাসীদের জীবনযাপনের মধ্যে অন্যতম রুটিন কাজ হচ্ছে দেশের জন্য হা-পিত্যেস করা। এটাকে কেউ দুঃখবিলাস বলেন, কেউ বা বলেন নিছক লোক দেখানো দেশপ্রেম।

দেশ নিয়ে স্মৃতিচারণে মনে পড়ে যায় নিজের কখনো কাপড় না ধোয়ার কথা, চা বানিয়ে না খাওয়ার কথা, আড্ডাবাজির কথা অথবা পয়সার টানাটানিতে কোনো ছোটকাজ (অডজব) না করার কথা। সেইসব সুখের দিনগুলো, সময়গুলো, মুহূর্তগুলো ছেড়ে কেন আমরা বিদেশে থাকি?

ফিরে গেলেই তো হয়। কিন্তু বাস্তবতা তা বলে না। নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে পারিপ্বার্শিকতার চাপেই হোক, কিংবা সন্তানের উচ্চ ভবিষ্যতের কথা ভেবেই অনেকেই আর দেশের সেই সুখস্মৃতিময় দিনগুলোর ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরির বেলায় আনন্দিত হন না। আমি মনে করি দরকারও নাই।

আমাদের সবারই দেশের প্রতি যে হাহাকার রয়েছে, সেটাকে অসম্মান করার কোনো কারণ নাই। অপদস্থ করার জন্য হুট করে 'দেশে কেন ফিরে যান না' টাইপের কথা বলার মধ্যেও কোনো ক্রিয়েটিভিটি নাই। ঢাকা শহরে অট্টালিকার চিপায় পড়ে আকাশ দেখতে না পেয়ে আফসোস করেছি, ইশ গ্রামে কি মুক্ত আকাশ-বাতাস। ভেবেছি অথচ গ্রামে গিয়ে থাকিনি।

বাংলাদেশ একটি বিশাল গরীব জনগোষ্ঠির দেশ। ছোট মাটিতে এতো চাপ সয় না। তাই যে যেভাবে পারছে দেশের বাইরে ছুটতে চাইছে, কেউ সৌদী আরবে মরুর বুকে ইমারত তৈরির কাজ করছে, কেউ মেরিকার এসি রুমে এইমাত্র অডজব সেরে এসে ব্লগিং করছে। অবশ্য খোদা না করুক আর কোনো বাংলাদেশীকে প্লেনের চাকায় কিংবা কন্টেইনার বাক্সে দেশত্যাগের ইচ্ছায় পেয়ে বসে।

মানবাধিকারকর্মী কর্মী নাসরিন যখন মারা গেলেন তখন তার সম্পর্কে অনেক আর্টিকেল বেরিয়েছিল। সেইসব আর্টিকেলে কারো লেখায় জানতে পারি নাসরিন সবসময় চাইতেন প্রবাসে বাঙালিরা যেন সবসময় কিছু একটা করে সেখানেই শক্ত আসন গেঁড়ে বসতে পারে, বুকের মধ্যে দেশপ্রেম নিয়ে তারা সেখানেই থেকে যাক, দেশে ফেরার দরকার নাই। তাহলে দেশের বিপদে ওইসব মানুষদের কাছে ছুটে যাওয়া যায় সাহায্য কিংবা পরামর্শের জন্য। কথাটা আমার খুব ভালো লেগেছিল।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইহুদীরা ব্যাপকভাবে পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু যেখানেই তারা থাকুক না কেন নিজেদের একটা দেশ গড়ার তাড়না তাদের সবসময়ই ছিল, এবং ভালোভাবেই সেটা করতে পেরেছে। সেজন্য তাদের সবাইকে মধ্যপ্রাচ্যে জড়ো হতে হয়নি। ইহুদীরা আজকের বিশ্বে কি বুদ্ধিতে কোন পর্যায়ে আছে, সেটা আর না বলি।

দেশের জন্য ওইসব ছটফটানি মেরিকা-লন্ডন-মন্ট্রিলের মতো নিরাপদ জায়গায় বসে করেও যদি দুইটা টাকা দেশে বেশি পাঠানো যায়, ক্ষতি কি? দেশের জন্য কিছু করতে হলে দেশেই থাকতে হবে এমন কোনো কথা নেই। যার যার জায়গায় থেকেই সেটা করা যায়। জাতি হিসেবে আমাদের মার্কেটিংটা খুবই খারাপ, সেইটাতে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। আর সেজন্যই ক্রেতার কাছাকাছি থাকাটা জরুরি, যদি সে সুযোগটা থাকে।

বিদেশের ছাত্রছাত্রীরা অনেকেই লোন নিয়ে এসে উচ্চশিক্ষা নিচ্ছেন। এদের অনেকেই দেশে হয়তো ফেরত যাবেন না। সবুজ পাতা, লাল পাতার জন্য থেকে যাবে। থাকুক না, সমস্যা নাই তো। আমরা যদি ছড়িয়ে না পড়ি তাহলে আবার কিসের তাগিদে এক হতে চাইব? আমাদের মধ্যে জাফর ইকবাল ক'জন আছেন? বা আমরা সবাই চাইলেই কি জাফর ইকবাল হতে পারি? ভিন্ন পাসপোর্টধারী বাংলাদেশী নাগরিকদের (NRB) জন্য যে কোনো ব্যবসায় প্রথম ১০ বছরে কোনো সরকারি ট্যাক্স দিতে হয় না। লাল পাতা, সবুজ পাতা নিয়ে এই উদ্দেশ্যে কেউ যদি দেশে ফেরত যায় তাতেও তো বাংলাদেশের লাভ, অনেকেরই কর্মসংস্থান হবে।

দেশের জ্যাম-লোডশেডিং-ছিনতাই নিয়ে নাক সিঁটকায় কিন্তু কোনো সাপ্তাহিক আড্ডায় দেশের জন্য কেঁদে উঠলে তাকে ভুল বুঝার অবকাশ নাই। বুঝতে হবে তার হৃদয়ের কোণায় দেশ নিয়ে একটা সুখ চিনচিন করে। সেই তাগিদে সে অনেক কিছুই করে ফেলতে পারে। শুধু আমাদের সবারই সে ইচ্ছাটা লালন করতে হবে ...