Tuesday 17 March 2009

বলিউডের প্রেমিকারা

ভারতেশ্বরী হোমসে খালাত বোন পড়ত। সেখানে প্রতি সপ্তাহে একদিন হিন্দি সিনেমা দেখানো হতো। ছুটিছাটায় বাড়িতে এলে বোনের মুখে সেইসব ছবির গল্প শুনতাম। আমার ভান্ডারে হিন্দি ছবি বলতে তখন পর্যন্ত ইনকিলাব আর কুলি। পাশের বাড়ির মাহতাব ভাইরা ভিসিআর ভাড়া করে আনায় সেই দুইটা ছবি দেখেছিলাম। হিন্দির 'হ' তখন পর্যন্ত আয়ত্ত হয়নি। মারামারির দৃশ্যগুলো শুধু এনজয় করতাম।


একটু বড় হয়ে ফাঁকে ফুঁকে হিন্দি ছবি দেখা শুরু করলেও ভাষাটা বুঝে উঠতে পারিনি তখনো। বোন ততোদিনে ভারতেশ্বরী হোমস ছেড়ে এসেছে। পাড়া মহল্লায় গজিয়ে উঠেছে নানান ভিডিও শপ। খালার বাড়িতে বেড়াতে গেলে ১৫ টাকা দিয়ে মাস্টার ক্যাসেট এনে হিন্দি ছবি দুয়েকটা দেখা শুরু করি। তবে সবচেয়ে ভালো মনে করতে পারি কারিশমার প্রথম ছবি, যেখানে সে বিকিনি পড়েছিল। এছাড়া ম্যায়নে পেয়ার কিয়া, দিল, কেয়ামত থেকে কেয়ামত, আশিকীও দেখে ফেলি। কিন্তু ওইসব নায়িকার রূপে না ভুলে প্রেমে পড়ে যাই মনীষা কৈরালার।

বম্বে ছবিটি আমি সর্বোচ্চ ৬ বার দেখেছিলাম। নেপালী রাজকন্যা মনীষার হাসি বুকে ছোরা মারত। নারীদেহ সম্পর্কে বুঝতে শিখেছি। আমার বলিউডি প্রথম প্রেমিকা মনীষার উন্নত বুক আরো বেশি শিহরণ জাগায় তখন আমার মধ্যে। প্রথম যখন ইন্ডিয়া গেলাম, সেই প্রথমদিনই বড় পর্দায় প্রেমিকা মনীষাকে দেখার জন্য হোটেল বুকিং দেয়ার পরপরই ঢুকে যাই 'দিল সে' দেখার জন্য সিনেমায়।



মনীষা প্রেম অনেক দিন ছিল। কিন্তু আমার সেই প্রেম মনীষা বুঝে না। আমিও মনে হয় অভিমানে খুঁজে নিই রাণীকে। আহ্‌, ভাবতেই ভালো লাগে মেয়েটা বাংলায় কথা বলতে পারে। আর কণ্ঠ! সেই সেক্সি হাসকি ভয়েসের কারণে চারপাশে কেবলই শুনি রাণীর গলা। প্রেমে এমনই আসক্ত হয়ে পড়ি যে আজ পর্যন্ত মুক্তি পাওয়া রাণী কোনো ছবিই বাদ দেয়নি। আর তাই আমার জীবনে সবচেয়ে বড় প্রেম এখন পর্যন্ত রাণীই হয়ে রইল। মিনিস্কার্টে দেখতে রাণীকে সবচেয়ে পছন্দ করতাম। ওর হাসি দেখলে আমি প্রশ্রয় পেতাম। চোখের নিচের ফোলা অংশটুকু নিয়ে যখন হাসত রাণী, মনে হতো যেন বলছে, আসো, কাছে আসো।



কিন্তু রাণীও আমাকে দূরে ঠেলে দেয়। চলে আসি লন্ডনে। হিন্দি মিউজিক চ্যানেলগুলো দেখতে দেখতে একটা মেয়ে নজর কাড়ে। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি মেয়েটা লন্ডনের আপটন পার্কের মেয়ে। জন্মসূত্রে ইন্ডিয়ান হওয়ার কারণে ফিল্ম ইন্ড্রাস্ট্রিতে কাজ করছে। প্রথম জীবনে অতি থার্ড ক্লাস একটা মুভিতে অভিনয় করলেও তার পরবর্তী ছবিগুলো বেশ হিট হয়েছে। এতো স্নিগ্ধ একটা মেয়ে .... হুম... ধরতেই পারছেন আমি ক্যাটরিনা কাইফের কথা বলছি। এতো পরিশুদ্ধ আর স্বচ্ছ মনে হয় তাকে, বিশেষ করে দাঁতগুলো দেখলে মনে হয় চোখ ঝলসে যাচ্ছে। ছিপছিপে ফিগারে যখন নড়েচড়ে উঠে ক্যাটরিনা তখন আমার বুকে ব্যথা করে। আহ ... তেরি ও .. তেরি ও ...



কিন্তু হায়! এতো কম সময়ের জন্য ক্যাটরিনা আমার জীবনে আসবে আমি ভাবতেও পারিনি। এক ঝটকায় তাকে আমার হৃদয় থেকে হটিয়ে দিল আরেক নয়নাসুন্দরি। আমার আফসোস হলো না এতোটুকু। ক্যাটরিনাকে হারিয়ে আমি পেলাম আরেক অমূল্য রতন ... সোনম কাপুর। এমন সুন্দর করে মেয়েটা হাসে কেন? অদ্ভূত সরলতা মাখা মিষ্টি মুখের সোনম আমার বর্তমান প্রেমিকা। আমার মনে হচ্ছে হৃদয়ের একদম গভীরে বসে গেছে সে। এতো সহজে কেউ কেড়ে নিতে পারবে না তাকে আর ...



ছবি কতৃজ্ঞতা : গুগোল স্যার

3 মন্তব্য:

মাজেদুল ইসলাম said...

ভাই ছোটবেলা থেকে অনেক বলিউড কন্যা দেখলাম তাদের কাউকেই আমার মনে ধরল না,কিন্তু যেদিন সাওয়ারিয়াতে সোনম কে দেখি সেদিন থেকেই আমি তাঁর ভক্ত।আপনার শেষ পছন্দটাই শুধু আমার সাথে মিলে গেলো।এত নিষ্পাপ চেহারার মেয়ে আমি আর দেখিনি।

Anonymous said...

মজা পেলাম।

Anonymous said...

বাপরে! পুরা "নায়িকা ঝুড়ি" খুলে বসছেন দেখি...