Wednesday 15 July 2009

নামচা ০৩

অনেকদিন ব্লগ লেখা হয় না। লিখতে গিয়ে ভাবি কি লিখব। তবে ব্লগ পড়া হচ্ছে নিয়মিত। ব্লগারদের বিভিন্ন বিষয়ে লেখা পড়ে মনে হয় - আরে, এ বিষয়ে আমি নিজেই তো লিখতে পারতাম। পরমুহূর্তে মনে হয় - ভালোই হলো, আমার আর লিখতে হলো না। অফিসে আমার উপর ব্লগিংয়ের নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল। তারপরও লুকিয়ে চুরিয়ে টুকটাক ব্লগিং করতাম। কিন্তু তাতেও ধরা খেয়ে যাই। শেষ পর্যন্ত অফিস, আমার ব্লগিং বিষয়টাকে ওভারলুক করছে। কুত্তার ল্যাজ যেমন শতচেষ্টাতেও সোজা করা যায় না, তাই বেহায়ার মতো আমার ব্লগিংয়ের চেষ্টাতেও এখন অফিস রা করে না।


অমিত আহমেদের ঢাকা সিরিজ পড়ছি। ভালোই লাগছে। কিন্তু সত্য কথা হলো ঢাকা/ বাংলাদেশকে এখন আর মিস করি না। এই লন্ডনের হয়েছে এক জ্বালা - এতো এতো বাঙালি, বিদেশ বিদেশ ভাবটাই মারা গেছে। বাংলাদেশী হেন পণ্য নাই যেটা মিলে না। চাইলেও বাংলাদেশী রুচিগুলোকে পরিহার করা যাচ্ছে না। বিয়ে করার পর বোহেমিয়ান লাইফের সমাপ্তি ঘটেছে। হুটহাট করে কিছু করে ফেলাও যাচ্ছে না। একটা ছকে আটকা পড়ে যাওয়ায় মাঝে মাঝেই বোর হয়ে যাই।

বাংলাদেশ থেকে নাটক অঙ্গনের বেশকিছু আর্টিস্ট এসেছে। সেই একই অবস্থা, ৩ দিনের কাজ একদিনে নামানোর চেষ্টা চলছে, ৫২ পর্বের নাটক ২২ দিনে নামাবে। আর্টিস্টরাই বুমম্যান, লাইটম্যান, মেকাপম্যান। ডিরেক্টরও চালাচ্ছে - মাস্টার-ক্লোজ-ওএস-মাস্টার-ক্লোজ-ওএস, ফাঁকেফুঁকে লং-মিডলং, তারও ফাঁকেফুঁকে একটা ট্রলি-ডলি। বিদেশে নাটক বানালে কি বাংলাদেশের দর্শকরা লুফে নেয়! তো এই আর্টিস্ট সম্ভারে আমার প্রিয় বন্ধুটিও (আনিসুর রহমান মিলন) এসেছে। তাকে দেখার উদ্দেশ্যে এক রাতে রওনা হলাম লন্ডন থেকে আড়াই ঘন্টা দূরের বাথ সিটিতে। কয়েকদিন আগে গ্যারেজ থেকে গাড়িটি ছাড়া পেয়েছে। সেই গাড়ি নিয়ে রাতের বেলায় চালাতে গিয়ে দেখি স্টিয়ারিং দারুণ জ্যাম। তারপরও ঘন্টায় ৮০ মাইল করে স্টিয়ারিং সামলে জিগজাগ করতে করতে বাথে ঠিকই গিয়ে পৌছাই। বাথ থেকে ফিরে গ্যারেজে গাড়ি চেক করাতে গিয়ে জানতে পারি আমার স্টিয়ারিংয়ের কোনো একটা পার্ট টোটালি ড্যামেজ ছিল। যে কোনো মুহূর্তে স্টিয়ারিং লক হয়ে যেতে পারত। আমি হাসি, ওই একই গাড়িতে অনেকদিন আগে ম্যানচেস্টার গিয়ে আবার ফিরেও এসেছি। পরদিন সার্ভিস করাতে গিয়ে জানতে পেরেছিলাম আমার ব্রেক তারও সপ্তাহখানেক আগে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। আমি ৮০ বছর বাঁচব - এসব দেখেশুনে বিশ্বাসটা দিনদিন পোক্ত হচ্ছে।

তো বন্ধুর সাথে মোলাকাত হলো। নাটকের ডিরেক্টর-আর্টিস্ট-প্রডিউসার পূর্বপরিচিত হওয়ায় দারুণ আড্ডাও হলো। অনেকদিন নাটক নির্মাণ থেকে দূরে থাকায় হাত-পা নিশপিশ করছিল। বহুদিন পর শুটিং আবহে ফিরে গিয়ে ভালোই লেগেছে। মাথার ভিতর অসংখ্য স্ক্রিপ্ট কিরকির করে। কবে যে সব ঝেড়ে নামাতে পারব।

অর্থনৈতিক বিষয়ে দারুণ মাইংকাচিপায় আছি। ১টা পাউন্ডও বাজে খরচ করা যাচ্ছে না। লোনটোন নিয়ে ত্রাহিত্রাহি অবস্থা। আগামী বছরের মাঝামাঝি বাংলাদেশে ফিরে যাবার ইচ্ছা থাকলেও লোনের কারণে আরো ১ বছর পিছিয়ে যেতে পারি। তড়িৎ কোনো সমাধান নেই, তাই মাসিক ১০ পাউন্ড বাজেট করে লটারি খেলছি নিয়মিত। মাঝে মাঝে প্ল্যানিং করি এত্তো এত্তো টাকা দিয়ে কি করব। প্ল্যানিংয়ের এ সময়টুকু বেশ আমোদে কাটে।

নতুন বাসায় উঠেছি গত ১ জুলাই। এ বাসায় ইন্টারনেট নেই। পুরোনো বাসাতেই ইন্টারনেট সমস্যা করছিল। চ্যাটিং করতে পারি, টরেন্ট দিয়ে মুভিও ডাউনলোড হচ্ছে, কিন্তু ব্রাউজার অপেন হচ্ছে না। সুশান্তও কোনো সমাধান দিতে পারল না। ঠিক করেছি আমেরিকা থেকে সুশান্ত ফিরে এলে কমপিউটারটা তার বাসায় দিয়ে আসব।

ইদানিং ফুটবল ফলো করছি বেশ। ব্যক্তিগতভাবে ক্রিস্টিয়ান রোনাল্ডো আমার চরম অপছন্দের খেলোয়াড়া। তার সাথে প্রিয় খেলোয়াড় কাকা খেলবে মানতে পারছি না। ইংলিশ দল হিসেবে আমার সাপোর্ট করছি ম্যানসিটি। তেভেজ জয়েন করার পর রবিনহো মিলে দারুণ খেলা উপহার দিবে ম্যানসিটি। আর প্রিয় দল বার্সেলোনা তো রইলই।

মাঝে মাঝে গল্প লেখার ইচ্ছে হয়। কিন্তু ব্লগে এতো ভালো ভালো গল্পকারের কারণে সাহস করে উঠতে পারছি না।

1 মন্তব্য:

Unknown said...

সমস্যা নেই বন্ধু, চালিয়ে যাও। তুই আশি কেন বেটা, নব্বই বছর বাঁচবি! আমিও বাঁচব বোধহয়, মাস দুই আগে যে একখানা অ্যাক্সিডেন্ট ঘাড়ের ওপর দিয়ে গেল... সে তো তুই জানিস-ই।
আর অফিসের ওপর এমন মেজাজ খারাপ হয়। আমি যে অফিসে যাই, সব অফিসেই সব বাংলা ব্লগগুলোকে ব্লক করে দেয়া হয় মাসদুয়েকের মধ্যেই। আইটিকে কিছু জিজ্ঞেস করলে দাঁত বের করে হাসে। বলে, বস, আমাদের কিছু করার নেই। হাইকমান্ডের নির্দেশ। যেকোনো সাইটে দু-দিন, তিনদিন টানা থাকলেই, আর সেটা পেশার ধরনের সাথে কোনোভাবে সঙ্গতিপূর্ণ না হলেই ঘ্যাচাং!
এই আর কি! গল্প লেখ ব্যাটা! আর দশজন ভালো লেখে বলে কি তুই চুপচাপ বসে থাকবি? ভালো থাকিস। তোর ব্লগে মাঝেমধ্যেই ঢুঁ মারার চেষ্টা করব!

মৃদুল আহমেদ