বাংলাদেশী ছাত্রছাত্রীদের জন্য যুক্তরাজ্যের ভিসা প্রাপ্তির প্রক্রিয়াগুলো সহজ হয়ে গেছে। যে কোনো ছাত্রছাত্রীর যদি
* বৃটিশ হোম অফিস লিস্টেড কলেজের অফার লেটার থাকে এবং
* আবেদনকারীর ব্যাংক একাউন্টে (২৮ দিন বা তদুর্ধ্ব) মিনিমাম ১০ লাখ থাকে
তাহলে তিনি কোর্সের অবস্থা অনুযায়ী মিনিমাম ২ বছর থেকে ৩ বছর ভিসা পেয়ে যাচ্ছেন। বৃটিশ হাইকমিশন আর তেমন কোনো ঠিকুজি যাচাই করছে না। পশ্চিমা বিশ্বের হাতছানি এবং উচ্চতর পড়াশোনার জন্য অনেকেই এখন বৃটেন আসছেন। এক হিসেবে জানা গেছে গত ৩ মাসে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৫-২৮ হাজার ছাত্রছাত্রী যুক্তরাজ্যে এসেছেন। কিন্তু তাদের অবস্থা কি? কেমন কলেজে তারা পড়ছেন?
স্টুডেন্টদের জন্য স্বর্গ ছিল লন্ডন সহ পুরো যুক্তরাজ্য। ভিসাপ্রাপ্তি কঠিন থাকলেও কোনোমতে চলে আসা গেলে ২০ ঘন্টার বেশি কাজ করে পুরো মাসে ২০০০ থেকে ৩০০০ পাউন্ড আয় করা সম্ভব ছিল। ভিসা রিনিউ ফর্মে NI Number (National Insurance) নাম্বার দিতে হতো না বলে হোম অফিস ধরতে পারত না কোন স্টুডেন্ট কতো ঘন্টা কাজ করেছে। কিন্তু ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সংগঠিত হবার পর থেকেই এসব সুবিধা কমে আসতে আসতে এখন শূণ্যের কোঠায় চলে গেছে। ভিসা রিনিউ করার চার্জ তো বেড়েছেই, সাথে এনআই নাম্বার দিতে হচ্ছে। ফলে ২০ ঘন্টার বেশি কাজ করার সুযোগ নেই। এছাড়াও বাড়তি কাজ দেয়ার কারণে মালিক-কর্তৃপক্ষের জরিমানার কারণে সেই ঝুঁকিও কেউ নিচ্ছে না।
কিছু কিছু কলেজ ছিল যারা 'ভিসা কলেজ/ মামা কলেজ' নামে পরিচিত ছিল। এসব কলেজের কাজ ছিল ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি ঠিক রাখা, ফাঁকে ফুঁকে দুয়েকটা টেস্ট-পরীক্ষা নিয়ে তাদের ছাত্রত্ব বজার রাখা, ফোনটোন করে হোম অফিসের ভিজিটের দিন কলেজে আসতে বলা। এবাবদ তারা বছরে একটা ফি (৪০০ থেকে ১০০০ পাউন্ড পর্যন্ত) ছাত্রদের কাছ থেকে নিত। এসব কলেজের ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনার নামে আসলে অর্থ উপার্জন করতে বলে এসব কলেজের চাহিদা ছিল। (আমারও অবশ্য এতে কোনো আপত্তি ছিল না)
তবে হোম অফিসের কঠোর হস্তক্ষেপে প্রায় ১০ বছর ধরে চলে আসা এই ভিসা কলেজের রমরমা ব্যবসায় ধ্বস নেমেছে। এখন প্রতিটি কলেজকে হোম অফিস কর্তৃক এফিলিয়েটেড হতে হচ্ছে। যারা নিয়ম রক্ষা করে পারছে না তারা ব্যবসা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছে। এদিকে কড়া করে অন্যদিকে ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করে দিয়েছে হোম অফিস। বেনিয়া বৃটিশ জাতি তার ব্যবসার নতুন দিক উন্মোচন করেছে।
এখন প্রতিটি কলেজে ভিসা পাবার পূর্বে ন্যুনতম ১২০০ থেকে ৩০০০ পাউন্ড দিয়ে আসতে হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের যেটা আগে ছিল না। তো প্রাথমিক অবস্থাতেই বৃটিশ গভর্ণমেন্ট তার দেশে অনেকগুলো পাউন্ডের যোগান পেয়ে যাচ্ছে। কলেজগুলো থেকে প্রতিটি স্টুডেন্ট বাবদ একটা ফি কেটে নেয় হোম অফিস (এ ব্যাপারে আমি ঠিক শিওর না, কোনো ব্লগার জানলে শুধরে দেবেন)। ওদিকে ভিসার জন্য বৃটিশ হাইকমিশনে ফি তো দেয়া হচ্ছেই।
একটা অফার লেটার আর একাউন্টে ১০ লাখ টাকা, চলে আসুন লন্ডন। জমজমাট বিজ্ঞাপনে আগপাশতলা না ভেবে ছাত্রছাত্রীরা লাফিয়ে পড়ছে আর মুনাফা লুটছে অসাধু বাংলাদেশীরা। আপনার টাকা নেই কোনো সমস্যা নেই। ১০ লাখ টাকা আপনার একাউন্টে ১ মাস জমা রেখে ভিসা পাওয়ার পর সুদ বাবদ আপনার কাছ থেকে ২/৫ লাখ টাকা নিয়ে নিচ্ছে। ছাত্রছাত্রীরা ভাবছে ২/৫ লাখ টাকা খরচে লন্ডন আসা গেল। লন্ডন গেলেই চাকরি, পড়াশোনা, ঋণের টাকা পরিশোধ, বাবা-মায়ের মুখে হাসি।
কিন্তু আসল চিত্র ভিন্ন। বতর্মানে বৈশ্বিক মন্দার কারণে চাকুরি নাই, শাদা চামড়ার মানুষের কাছে পয়সা নাই, তাই বাঙালি রেস্টুরেন্টের পসার কমে গেছে। বাড়ি ভাড়া অত্যধিক। লন্ডন শহরে ছোটখাট অনেক মসজিদ আছে, সেখানে কিছু কিছু স্টুডেন্ট রাত্রি যাপন করছে। শীতের শুরু, ভালো কোনো বাসস্থান না পেলে ঠান্ডায় কষ্ট পেতে হবে। আগে যেমন পড়াশোনা না করে থাকা যেত এখন সেটা সম্ভব না। আপনারকে সপ্তাহে ৩ দিন অবশ্যই কলেজ এটেন্ড করতে হবে। সেমিস্টার/ বছর গেলেই পয়সা দিতে হবে। যাদের সামর্থ্য আছে তারা ভালোই আছেন। কিন্তু বেশিরভাগ স্টুডেন্ট কাজ করে উপার্জন করে পড়বেন বলে ঠিক করেছেন তারা সমস্যায় পড়েছেন। লন্ডনে একজন ছাত্রের সব মিলিয়ে ৩৫০ থেকে ৪০০ পাউন্ডের প্রয়োজন আরাম আয়েশ ছাড়া বেঁচে থাকতে, বাংলাদেশী টাকায় যা প্রায় ৫০ হাজার টাকার মতো।
তবে লন্ডনের মতো জব মার্কেটের অতো অবস্থা খারাপ নয় বাইরের শহরগুলোতে। কিন্তু সেখানে যাওয়া যাবে না হোম অফিসের তদারকি আর কলেজের উপস্থিতির কারণে। তাছাড়া মোটামুটি কম পয়সায় বাইরের শহরগুলোতে পড়তে যাওয়ার মতো কলেজও নেই।
লন্ডনের বাংলা কমিউনিটি টিভিচ্যানেল 'চ্যানেল এস' বাংলাদেশ থেকে আসা এসব স্টুডেন্টদের সঙ্গে কথা বলেছে। প্রতিবেদক মোহাম্মদ জুবায়ের-এর ভিডিও রিপোর্টটি নিচে দেখুন। যদিও স্টুডেন্টদের অনুমতি নিয়েই প্রতিবেদক তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন তারপরও আমি তাদের চেহারা আবছা করে দিলাম।
ভিডিওর লিংক
* বৃটিশ হোম অফিস লিস্টেড কলেজের অফার লেটার থাকে এবং
* আবেদনকারীর ব্যাংক একাউন্টে (২৮ দিন বা তদুর্ধ্ব) মিনিমাম ১০ লাখ থাকে
তাহলে তিনি কোর্সের অবস্থা অনুযায়ী মিনিমাম ২ বছর থেকে ৩ বছর ভিসা পেয়ে যাচ্ছেন। বৃটিশ হাইকমিশন আর তেমন কোনো ঠিকুজি যাচাই করছে না। পশ্চিমা বিশ্বের হাতছানি এবং উচ্চতর পড়াশোনার জন্য অনেকেই এখন বৃটেন আসছেন। এক হিসেবে জানা গেছে গত ৩ মাসে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৫-২৮ হাজার ছাত্রছাত্রী যুক্তরাজ্যে এসেছেন। কিন্তু তাদের অবস্থা কি? কেমন কলেজে তারা পড়ছেন?
স্টুডেন্টদের জন্য স্বর্গ ছিল লন্ডন সহ পুরো যুক্তরাজ্য। ভিসাপ্রাপ্তি কঠিন থাকলেও কোনোমতে চলে আসা গেলে ২০ ঘন্টার বেশি কাজ করে পুরো মাসে ২০০০ থেকে ৩০০০ পাউন্ড আয় করা সম্ভব ছিল। ভিসা রিনিউ ফর্মে NI Number (National Insurance) নাম্বার দিতে হতো না বলে হোম অফিস ধরতে পারত না কোন স্টুডেন্ট কতো ঘন্টা কাজ করেছে। কিন্তু ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সংগঠিত হবার পর থেকেই এসব সুবিধা কমে আসতে আসতে এখন শূণ্যের কোঠায় চলে গেছে। ভিসা রিনিউ করার চার্জ তো বেড়েছেই, সাথে এনআই নাম্বার দিতে হচ্ছে। ফলে ২০ ঘন্টার বেশি কাজ করার সুযোগ নেই। এছাড়াও বাড়তি কাজ দেয়ার কারণে মালিক-কর্তৃপক্ষের জরিমানার কারণে সেই ঝুঁকিও কেউ নিচ্ছে না।
কিছু কিছু কলেজ ছিল যারা 'ভিসা কলেজ/ মামা কলেজ' নামে পরিচিত ছিল। এসব কলেজের কাজ ছিল ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি ঠিক রাখা, ফাঁকে ফুঁকে দুয়েকটা টেস্ট-পরীক্ষা নিয়ে তাদের ছাত্রত্ব বজার রাখা, ফোনটোন করে হোম অফিসের ভিজিটের দিন কলেজে আসতে বলা। এবাবদ তারা বছরে একটা ফি (৪০০ থেকে ১০০০ পাউন্ড পর্যন্ত) ছাত্রদের কাছ থেকে নিত। এসব কলেজের ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনার নামে আসলে অর্থ উপার্জন করতে বলে এসব কলেজের চাহিদা ছিল। (আমারও অবশ্য এতে কোনো আপত্তি ছিল না)
তবে হোম অফিসের কঠোর হস্তক্ষেপে প্রায় ১০ বছর ধরে চলে আসা এই ভিসা কলেজের রমরমা ব্যবসায় ধ্বস নেমেছে। এখন প্রতিটি কলেজকে হোম অফিস কর্তৃক এফিলিয়েটেড হতে হচ্ছে। যারা নিয়ম রক্ষা করে পারছে না তারা ব্যবসা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছে। এদিকে কড়া করে অন্যদিকে ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করে দিয়েছে হোম অফিস। বেনিয়া বৃটিশ জাতি তার ব্যবসার নতুন দিক উন্মোচন করেছে।
এখন প্রতিটি কলেজে ভিসা পাবার পূর্বে ন্যুনতম ১২০০ থেকে ৩০০০ পাউন্ড দিয়ে আসতে হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের যেটা আগে ছিল না। তো প্রাথমিক অবস্থাতেই বৃটিশ গভর্ণমেন্ট তার দেশে অনেকগুলো পাউন্ডের যোগান পেয়ে যাচ্ছে। কলেজগুলো থেকে প্রতিটি স্টুডেন্ট বাবদ একটা ফি কেটে নেয় হোম অফিস (এ ব্যাপারে আমি ঠিক শিওর না, কোনো ব্লগার জানলে শুধরে দেবেন)। ওদিকে ভিসার জন্য বৃটিশ হাইকমিশনে ফি তো দেয়া হচ্ছেই।
একটা অফার লেটার আর একাউন্টে ১০ লাখ টাকা, চলে আসুন লন্ডন। জমজমাট বিজ্ঞাপনে আগপাশতলা না ভেবে ছাত্রছাত্রীরা লাফিয়ে পড়ছে আর মুনাফা লুটছে অসাধু বাংলাদেশীরা। আপনার টাকা নেই কোনো সমস্যা নেই। ১০ লাখ টাকা আপনার একাউন্টে ১ মাস জমা রেখে ভিসা পাওয়ার পর সুদ বাবদ আপনার কাছ থেকে ২/৫ লাখ টাকা নিয়ে নিচ্ছে। ছাত্রছাত্রীরা ভাবছে ২/৫ লাখ টাকা খরচে লন্ডন আসা গেল। লন্ডন গেলেই চাকরি, পড়াশোনা, ঋণের টাকা পরিশোধ, বাবা-মায়ের মুখে হাসি।
কিন্তু আসল চিত্র ভিন্ন। বতর্মানে বৈশ্বিক মন্দার কারণে চাকুরি নাই, শাদা চামড়ার মানুষের কাছে পয়সা নাই, তাই বাঙালি রেস্টুরেন্টের পসার কমে গেছে। বাড়ি ভাড়া অত্যধিক। লন্ডন শহরে ছোটখাট অনেক মসজিদ আছে, সেখানে কিছু কিছু স্টুডেন্ট রাত্রি যাপন করছে। শীতের শুরু, ভালো কোনো বাসস্থান না পেলে ঠান্ডায় কষ্ট পেতে হবে। আগে যেমন পড়াশোনা না করে থাকা যেত এখন সেটা সম্ভব না। আপনারকে সপ্তাহে ৩ দিন অবশ্যই কলেজ এটেন্ড করতে হবে। সেমিস্টার/ বছর গেলেই পয়সা দিতে হবে। যাদের সামর্থ্য আছে তারা ভালোই আছেন। কিন্তু বেশিরভাগ স্টুডেন্ট কাজ করে উপার্জন করে পড়বেন বলে ঠিক করেছেন তারা সমস্যায় পড়েছেন। লন্ডনে একজন ছাত্রের সব মিলিয়ে ৩৫০ থেকে ৪০০ পাউন্ডের প্রয়োজন আরাম আয়েশ ছাড়া বেঁচে থাকতে, বাংলাদেশী টাকায় যা প্রায় ৫০ হাজার টাকার মতো।
তবে লন্ডনের মতো জব মার্কেটের অতো অবস্থা খারাপ নয় বাইরের শহরগুলোতে। কিন্তু সেখানে যাওয়া যাবে না হোম অফিসের তদারকি আর কলেজের উপস্থিতির কারণে। তাছাড়া মোটামুটি কম পয়সায় বাইরের শহরগুলোতে পড়তে যাওয়ার মতো কলেজও নেই।
লন্ডনের বাংলা কমিউনিটি টিভিচ্যানেল 'চ্যানেল এস' বাংলাদেশ থেকে আসা এসব স্টুডেন্টদের সঙ্গে কথা বলেছে। প্রতিবেদক মোহাম্মদ জুবায়ের-এর ভিডিও রিপোর্টটি নিচে দেখুন। যদিও স্টুডেন্টদের অনুমতি নিয়েই প্রতিবেদক তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন তারপরও আমি তাদের চেহারা আবছা করে দিলাম।
ভিডিওর লিংক
1 মন্তব্য:
I agree with you..
Post a Comment